"আমাকে প্রধান করা হবে বলে টাকা নিয়েছে বিজেপি, কিন্তু টাকা নিয়েও প্রধান করেনি বিজেপি" বোর্ড গঠনের পর বললেন গ্ৰাম পঞ্চায়েতের একমাত্র নির্দল জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য। উল্লেখ্য দীর্ঘ টালবাহানা কাটিয়ে ত্রিস্তর নির্বাচনের প্রায় আড়াই মাস পর শুক্রবার ধূপগুড়ি ব্লকের গধেয়ারকুঠি গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন হয়ে গেল। ত্রিশঙ্কু হওয়া গ্ৰাম পঞ্চায়েতের একমাত্র জয়ী নির্দল প্রার্থীর সমর্থন নিয়ে বোর্ড গঠন করে বিজেপি। প্রধান হলেন বিজেপির বিজয় রায় এবং উপপ্রধান হলেন বিজেপির কৃষ্ণা রায়। তবে গ্ৰাম পঞ্চায়েতের দখল নিতে নির্দল জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যকে প্রধান করা হবে এবং তার কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করলেন নির্দল পঞ্চায়েত সদস্য। বোর্ড গঠন শেষ হতেই প্রধান, উপপ্রধান সহ পঞ্চায়েত সদস্য ও নেতাদের নিয়ে যখন আনন্দে গেরুয়া আবির মাখছেন বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। তখন একপাশে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন নির্দল পঞ্চায়েত সদস্য মহম্মদ আখতার উদ্দিন মিঞা। তিনি বলেন," গ্ৰাম পঞ্চায়েত ত্রিশঙ্কু হওয়ার পর বিজেপির পক্ষ থেকে আমার সমর্থন চাওয়া হয় এবং আমাকে প্রধান করা হবে বলে বলা হয়। বিজেপির জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামীও আমার সঙ্গে কথা বলেন। আমার কাছ থেকে টাকাও নেয় বিজেপি কিন্তু আজকে তারপরও আমাকে প্রধান করা হলো না। টাকা খেয়ে ওরা রাতারাতি আমার নাম কেটে দিয়েছে। ওরা যে কি খাইয়েছে জানিনা। তারপরও আমি বিজেপিকে সমর্থন করেছি।"
তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি একপ্রকার ঘুরিয়ে স্বীকার করে নিয়েছেন ধূপগুড়ি বিজেপির পশ্চিম মন্ডল সভাপতি কমলেশ সিংহ রায়। তিনি বলেন," বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে একটা খরচা হবে । যে কারণে প্রয়োজন ছিল টাকার । জেলা সভাপতির কাছে আমি সেই টাকা চাই। জেলা সভাপতি বলেন যে প্রধান হবে সেই খরচ করুক। বোর্ড গঠনের পরে না হয় সেই টাকা ফিরিয়ে দেওয়া যাবে। যে কারণেই হয়তো টিফিন খরচ বাবদ তিনি প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ করেছিলেন আরো কিছু খরচ করেছিলেন কিনা জানা নেই।"
উল্লেখ্য গধেয়ারকুটি গ্ৰাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ২৩ টি । তারমধ্যে বিজেপি পায় ১১ টি, তৃণমূল কংগ্রেস ৯ টি, সিপিএম ২টি ও নির্দল পায় ১ টি আসন। অর্থাৎ ত্রিশঙ্কু হয়ে পড়ে গ্রাম পঞ্চায়েত। যে কারণে গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করতে মরিয়া চেষ্টা চালায় যুযুধান দুই পক্ষ বিজেপি ও তৃণমূল। এরপর গত ৯ ই আগস্ট গধেয়ারকুঠি গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেদিন বোর্ড গঠন ভেস্তে যায়। পরবর্তীকালে ধূপগুড়ি বিধানসভার উপনির্বাচনের কারণে গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোট গঠন হয়নি।
তবে এদিন সকাল থেকেই গ্ৰাম পঞ্চায়েতের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন বিজেপি, তৃণমূল ও সিপিএমের কর্মী সমর্থকরা। কোনরকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয় এলাকায়। যদিও এদিন সিপিএমের দুই জয়ী প্রার্থী ছিলেন না। তারা কোন দলকেই সমর্থন করবেন না তাই উপস্থিত ছিলেন না বলে জানান স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। তবে বোর্ড গঠনের পর নির্দল সমর্থিতরা বিজেপি নেতাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান।